ICCR এর যে স্কলারশিপটা দেয়া
হয়, সেটাতে বাংলাদেশি স্টুডেন্ট নেয়ার পরিমাণ কিছুদিন আগে পর্যন্তও ছিলো
১০০ জন। গত দুই বা তিন বছর হলো সংখ্যাটা বেড়েছে। এখন প্রতি বছর ৩০০ জন করে
স্কলারশিপ পাচ্ছে। বেশি স্টুডেন্ট, বেশি আসার পরিমাণ - এবং সংগত কারণেই
বেশি প্রশ্নের উৎপত্তি।
প্রশ্ন আসাটা অস্বাভাবিক না। একটা স্টুডেন্ট নতুন একটা দেশে আসবে, তার ক্যারিয়ার নিয়ে ভাববে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ব্যাপার হচ্ছে, কিছু অতি জ্ঞানী সিনিয়রের উল্টা-পাল্টা সাজেশনের কারণে এই নতুন স্টুডেন্টগুলো বিভিন্ন বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছে, ফলে বাড়ছে অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নের পরিমাণ। তো নতুন স্টুডেন্টদের সেসব বিভ্রান্তি দূর হওয়া উচিত বলেই আমরা ইন্ডিয়াতে পড়াশোনা করে যাওয়া স্টুডেন্টরা মনে করি। সবাইকে পার্সোনালি কাউন্সেলিং করাও বিশাল সময়ের ব্যাপার। সেইজন্যেই এই নোট লেখা।
লেখা শুরু করার আগে দুইটা কথা স্ট্রিক্টলি বলে রাখিঃ
১। একজনকে দিয়ে, দুইজনকে দিয়ে সবাইকে বিচার করাটা আমাদের একটা কমন বদভ্যাস। সেই বদভ্যাসের প্রয়োগ দয়া করে কমেন্ট সেকশনে কেউ করবেন না। "আমি একজনের কাছে শুনেছি", "আমার এক বড় ভাই", "আমার এক পরিচিত" - ইন্ডিয়াতে পড়তে গিয়ে অমুক দেখেছে, তমুক অভিজ্ঞতা হয়েছে এইসব প্রশ্ন অ্যাভয়েড করবেন সবাই। একজন এসে একটা কথা বললো, আপনিও সেটা বিশ্বাস করলেন, বিশ্বাস করার আগে বিষয়টা যাচাই করলেন না - খুবই খারাপ কথা। কমন সেন্স অ্যাপ্লাই করলেই বোঝা যায়, একজনের একটা নেগেটিভ কথা একটা পুরো দেশের পড়াশোনার অবস্থা বোঝানোর জন্য কোনোই ভ্যালু বহন করে না।
২। কোনো বিষয়ে জানার জন্য গুগলের সহায়তা নিতে হবে সবার আগে। যে ফেসবুক করতে পারে, সে অবশ্যই গুগল করতে পারবে। তাই কোনো প্রশ্ন করার আগে শিওর হয়ে নেবেন যে, সেটার উত্তর গুগলে নাই বা আপনি চেষ্টা করেও খুঁজে পান নাই। "ইন্ডিয়াতে এই সাবজেক্টের জন্য ভালো ইউনিভার্সিটি কোনটা", "অমুক ইউনিভার্সিটির র্যাংকিং কতো" - এইসব তো গুগল করলেই জানা যায়রে ভাই ! জানা না গেলে এরপর বড় ভাইরা আছে। তার আগে নিজে একটু খাটেন। জীবন ছেলেখেলা নয় - Life is not a playboy :D
শুরু করা যাক সাধারণ জিজ্ঞাস্য প্রশ্নগুলোঃ
উত্তরঃ ভুরুঙ্গামারী কলেজ একটা সরকারি কলেজ, আর নটরডেম একটা বেসরকারি কলেজ। আপনাকে যদি দুইটার মধ্যে একটাতে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়, তাহলে কোনটাতে যাবেন ? ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ বা কোনো দক্ষিণ এশিয়ান দেশের প্রেক্ষাপটেই এই ধারণাটা ভুল যে, সরকারি কলেজ মানেই ভালো কলেজ আর বেসরকারি কলেজ খারাপ। যেখানে সাউথ এশিয়ার প্রায় দেশের সরকারই আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত, সেখানে ইন্ডিয়ার সরকারি কলেজ মানেই সেটা ভালো হবে, এমন কোনো গ্যারান্টি নাই। অবশ্য বেসরকারি সব কলেজই যে ভালো, তা নয়।
উত্তরঃ সব দেশেই কলেজ-ইউনিভার্সিটির মধ্যে ভালো খারাপ থাকে। তাই ইন্ডিয়ার কলেজ জন্যই ভালো কলেজ বা খারাপ কলেজ বলে ধরে নেয়ার কোনো কারণ অবশ্যই নাই। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে, ICCR কোনো খারাপ কলেজে স্কলারশিপ দেয় না। এই সংস্থাটার কাজ হচ্ছে ইন্ডিয়ার সাথে বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নয়ন। আপনাকে খারাপ কলেজে স্কলারশিপ দিলে ইন্ডিয়ার নামই ডুববে। সেই কাজটা ICCR করবে কেন ? অতএব, ICCR এর স্কলারশিপ যারা পাচ্ছেন, নিরানব্বই শতাংশ নিশ্চয়তা আমি ব্যক্তিগতভাবে দিচ্ছি যে, আপনার কলেজ অবশ্যই ভালো কলেজ।
উত্তরঃ "র্যাংকিং" বিষয়টাই খুবই বিতর্কিত একটা বিষয়। এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্য কোনো সার্বজনীন মাপকাঠি আবিষ্কৃত হয়নি, যেটা দিয়ে কোনো কলেজ বা ইউনিভার্সিটির ভালো বা খারাপ বোঝা যায়। সেইজন্য, কোনো পত্রিকা বা ওয়েবসাইট যে র্যাংকিং দেয়, সেটাকে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক পর্যবেক্ষণ বলেই ধরে নিতে হবে।
উদাহরণঃ অক্সফোর্ড ভালো না কেমব্রিজ ভালো ? কুয়েট ভালো না আইইউটি ভালো ? - এই প্রশ্নের কোনো যথাযথ উত্তর আপনি দিতে পারবেন না। যদি দিতে পারেন, তাহলে সেটা হবে ঘুরে ফিরে সেই একইঃ "আমার শালা কুয়েট থেকে পাশ করে এতো বেতনের চাকরি করছে", "আমার দুলাভাই আইইউটি থেকে পাশ করে এতো টাকা বেতন পাচ্ছে"। দুনিয়াতে আপনার শালা বা আপনার দুলাভাই-ই যে শেষ কথা নয়, সেটা বুঝতে হবে আপনাকে।
একান্তই র্যাংকিং দেখতে চাইলে রাম-শ্যাম-যদু মার্কা ওয়েবসাইটে না গিয়ে ভালো এবং নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট দেখতে হবে, যেমনঃ উইকিপিডিয়া। র্যাংকিং আপনার কলেজের না দেখে দেখবেন সেই কলেজ যে ইউনিভার্সিটির আন্ডারে, অর্থাৎ যে ইউনিভার্সিটি থেকে সেই কলেজের সার্টিফিকেট আসে - সেই ইউনিভার্সিটির র্যাংকিং।
উত্তরঃ অবশ্যই মাপকাঠি হচ্ছে তাদের স্টুডেন্টরা, কিন্তু স্টুডেন্টদের মধ্যে একজনের উদাহরণ নিলে হবে না। দেখতে হবে সেই কলেজের টিচারদের কোয়ালিফিকেশন কী। দেখতে হবে, সেই কলেজ থেকে পাশ করা স্টুডেন্টরা "সাধারণত" কেমন কাজ পেয়ে থাকে। একটা কলেজে হাজার হাজার ছাত্র পড়ে। আপনি র্যান্ডম তিনশোজন স্টুডেন্টের উদাহরণ দেখতে পারেন, তখন সেটা মোটামুটি গ্রহণযোগ্য একটা রেজাল্ট দিতে পারে।
কোনো প্রতিষ্ঠানই লিখে দিতে পারে না যে, তাদের স্টুডেন্টরা সবাই ভালো হবে। কলেজ লাইফটা পুরাপুরি আপনার ওপরে। আপনি যদি পড়াশোনা না করেন, তাহলে কোনো টিচাররই সাধ্য নাই আপনাকে দিয়ে পড়াশোনা করিয়ে নেয়।তাই কলেজ ভালো হলেও অনেক সময় স্টুডেন্ট ভালো হয় না, আবার কলেজ খারাপ হলেও অনেক ভালো স্টুডেন্ট ডেলিভারি দিতে পারে। আমাদের দেশের ক্যামব্রিয়ান কলেজটার কথা ধরা যাক। ম্যাট্রিকে জিপিএ-থ্রি পাওয়া স্টুডেন্টদের ভর্তি করিয়ে, সকাল বিকাল ডলা দিয়ে তারা স্টুডেন্টগুলোকে ইন্টারে জিপিএ-ফাইভ পাওয়ায়। এখন ক্যামব্রিয়ান বেসরকারি, র্যাংকিং এ নাই জাতীয় অদ্ভুত অজুহাত দিয়ে কি আপনি ক্যামব্রিয়ানকে রিজেক্ট করে দিতে পারবেন ?
উত্তরঃ শুধু গ্র্যাজুয়েশন করে আজকাল কোথাও চাকরি পাওয়া যাচ্ছে না, কম্পিটিশন বেড়ে গেছে অনেক। পিএইচডি করেও অনেকে চাকরি পাচ্ছে না। এটার মূল কারণ অবশ্য আপনার পুঁথিগত বিদ্যা। পড়েছেন ঠিকই, রেজাল্টও ভালো করেছেন - কিন্তু ব্যবহারিক জ্ঞান কিছুই নাই। তাহলে চাকরি পাবেন কীভাবে ?
তাই ইন্ডিয়াতে গ্র্যাজুয়েশন করে এসেই যদি আপনি বাংলাদেশে চাকরির আশা করতে থাকেন, তাহলে বিফল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বাংলাদেশের কয়টা স্টুডেন্ট গ্র্যাজুয়েশন করার সাথে সাথে চাকরি পেয়ে যাচ্ছে ? মিনিমাম মাস্টার্সটা আজকাল ম্যান্ডেটরি হয়ে গেছে চাকরির ক্ষেত্রে। এমনকি বুয়েটের বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররাও আজকাল এমবিএ করেই তারপর চাকরি পাচ্ছেন।
উত্তরঃ ICCR সাধারণত একজন স্টুডেন্টকে একবারের বেশি স্কলারশিপ দেয় না, যদি না সেই স্টুডেন্ট খুবই ফাটাফাটি রেজাল্ট করে। সেরকম রেজাল্ট না থাকলে ধরে নিতে পারেন যে, মাস্টার্সে আপনার স্কলারশিপ হবে না ইন্ডিয়াতে। তবে অ্যাপ্লাই করতেই পারেন। লেগে গেলে তো গেলোই।
উত্তরঃ নেসেসারি না যে আপনাকে গ্র্যাজুয়েশন-মাস্টার্স একই জায়গা থেকে করতে হবে। দুনিয়াতে প্রচুর দেশ প্রচুর স্কলারশিপ দেয়। আপনার রেজাল্ট ভালো হলে, ব্যক্তিগত আউটপুট এবং স্কলারশিপদাতা দেশগুলোকে কনভিন্স করার মতো ক্ষমতা ভালো থাকলে অন্য দেশেও স্কলারশিপ পেয়ে যেতে পারেন। সেই দেশ ইন্ডিয়ার চেয়ে ভালো দেশ হতে পারে, হতে পারে যে প্রতিষ্ঠানে মাস্টার্সের স্কলারশিপ পাবেন, সেটা আপনার গ্র্যাজুয়েশনের প্রতিষ্ঠানের চেয়েও ভালো।
উত্তরঃ চাকরি পাওয়াই যায়, তবে চাকরিটা করা যায় না একটা কারণে। কারণটা হচ্ছে ওয়ার্ক পারমিট। ইন্ডিয়ার জনসংখ্যা বিশাল। অন্য দেশের একটা লোককে চাকরি দেয়া মাত্রই একজন ইন্ডিয়ান বঞ্চিত হয়। স্বাভাবিকভাবেই সেজন্য ইন্ডিয়ান সরকার নিয়ম করে দিয়েছে, বিভিন্ন চাকরিতে ইন্ডিয়ান লোকেদের একটা নির্দিষ্ট পার্সেন্টে অগ্রাধিকার দেয়ার।
আপনাকে চাকরি দিতে হলে ইন্ডিয়ার আপনার কাছ থেকে সেই অনুপাতে ইন্ডিয়ার ইনকাম ট্যাক্স পেতে হবে। আর সেজন্য আপনাকে জব পার্মিট ইন্ডিয়া তখনই দিবে, যখন আপনার বার্ষিক আয় অন্তত ৬ লক্ষ টাকা হয়। এই অংকটা আবার সব জায়গায় সমান না। কিছু কিছু স্টেটে অংকটা ১৩ লক্ষ পর্যন্ত যায়।
এতো উঁচু বেতনের চাকরি গ্র্যাজুয়েশন করলেই কেউ পেয়ে যায় না। তাই মাস্টার্স করার পরে জব পার্মিট পেতে পারেন, কারণ তখন বেতন ভালো হবে আপনার। তার আগে, অর্থাৎ গ্র্যাজুয়েশন করার পর, জব পার্মিট পাওয়া এতোই কঠিন যে, সেটা প্রায় অসম্ভবের পর্যায়ে। তাই এই আশাটা না করাই বাস্তবসম্মত হবে।
উত্তরঃ এই বিষয়টা বেশ আলোচনা সাপেক্ষ। কয়েকটা ফ্যাক্টর কাজ করে এখানে।
প্রথমত, ইন্ডিয়া একটা বিশাল দেশ। আমরা তুলনামূলক খুব ছোট দেশের স্টুডেন্ট। ছোট দেশে থাকতে থাকতে মন-মানসিকতার একটা নেতিবাচক পরিবর্তন হয়, মনে হয় এর বাইরে যাওয়া সম্ভব না, গন্ডিটা মনে হয় খুবই ছোট। এজন্যই দেশের অল্প কয়েকটা ইউনিভার্সিটিতে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
অথচ, একজন স্টুডেন্টের হতে হবে আন্তর্জাতিক চিন্তা-ভাবনার অধিকারী। তাকে দেশের সীমানার বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে হবে। বাংলাদেশে আমাদের সেই অপরচুনিটি কম, ইন্ডিয়াতে অনেক বেশি। এখানে এসে গ্র্যাজুয়েশন করার পর স্টুডেন্টদের নজর অনেক বড় হয়, কারণ তারা সারা বিশ্বের স্টুডেন্টদের সাথে মিশতে শেখে। এইজন্যে ইন্ডিয়াতে পড়াশোনা করে স্টুডেন্টরা বেশির ভাগই অন্যান্য বিভিন্ন উন্নত দেশে চলে যায় হায়ার স্টাডি করতে।
ইন্ডিয়ানরা সারা দুনিয়াতে ছড়িয়ে আছে। ইন্ডিয়ার পড়াশোনার মান খারাপ হলে ইন্ডিয়ানরা সারা দুনিয়াতে সার্ভাইভ করছে কীভাবে ? এই প্রশ্নটা কমন সেন্স থেকে করলেই ইন্ডিয়ার পড়াশোনার মান বুঝতে পারার কথা। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আজকাল বাইরের দেশে যা দাঁড়িয়েছে, তাতে করে বাইরের দেশে পড়াশোনা করতে গেলে ইন্ডিয়ান সার্টিফিকেটের ভ্যালু বাংলাদেশের সার্টিফিকেটের চেয়ে বেশি পাওয়ার কথা। ঠিক এই কারণেই স্টুডেন্টগুলো সবাই বাইরে চলে যাচ্ছে, দেশে তেমন কেউই থাকছে না।
এজন্যই চোখ খুললেই ভারত থেকে পড়াশোনা করা উচ্চপদস্থ কোনো ছাত্র সচরাচর নজরে পড়ে না আমাদের। এর মানে এই নয় যে দেশে কেউই নেই। অনেকেই আছেন। গুগলে ICCR, Indian Bangladeshi Student, Alumni - এসব শব্দ লিখে সার্চ দিলেই বিভিন্ন লিস্ট পাওয়া যাবে তাদের। আমি যে লিস্টগুলো পেয়েছি, তাদের একটা বড় অংশ বেশ ভালো পজিশনেই আছেন। আমাদের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির টিচারদের মধ্যে অনেকেই ইন্ডিয়ান গ্র্যাজুয়েট বা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট।
সমস্যা হচ্ছে, আমাদের নজরে আসে কিছু সিনিয়র, যারা দিনে রাতে ইন্ডিয়ার পিন্ডি চটকাচ্ছে এবং বলছে ইন্ডিয়ার পড়াশোনা ভালো না। ওপরের উদাহরণগুলো দিয়ে আশা করি যথেষ্ট প্রমাণ দিয়েছি, ইন্ডিয়ার পড়াশোনার মান কেমন। তাহলে কেন এমন করছে এই সিনিয়ররা ? কারণটা খুবই হাস্যকর।
আসলে হঠাৎ করে বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়াতে এসে সবাই তাল ঠিক রাখতে পারে না। বড় দেশ, প্রচুর সুযোগ সুবিধা। সাথে আছে হাতে ICCR এর দেয়া নগদ টাকা। প্রচুর ছেলে-মেয়ে এখানে এসে হঠাৎ স্বাধীনতা পেয়ে নষ্ট হয়ে যায়। স্বাধীন জীবন, ঠেকানোর কেউ নেই। শস্তা মদ, খোলামেলা পোশাকের মেয়ে - এগুলোতে মজে যায় তারা। এর কারণে তাদের রেজাল্ট খারাপ হয়। একটা খারাপ রেজাল্টের স্টুডেন্টকে কে চাকরি দিবে ? আবার এমনও দেখা যায়, বাংলা মিডিয়াম থেকে ইউনিভার্সিটি লেভেলের ইংলিশ মিডিয়ামে এসে অনেক স্টুডেন্ট কিছুই বুঝতে পারে না। সুতরাং তারা রেজাল্ট খারাপ করে। অনেকে আবার ঠাডা মুখস্তবিদ্যা দিয়ে ভালো রেজাল্ট হয়তো করে ফেলে, কিন্তু ভিতরে কিছুই নাই।
নিজের অক্ষমতার এই দায়টা খুব সুন্দরভাবে চাপিয়ে দেয়া যায় ইন্ডিয়ার ওপরে। বলে দেয়া যায়, ইন্ডিয়ার পড়াশোনার মান ভালো না। একটা বার চিন্তা করে দেখা কি উচিৎ নয় যে, সেই স্টুডেন্টের মানটা কেমন ? যদি সে খারাপ স্টুডেন্ট হয়, তাহলে সেই দোষ কি ইন্ডিয়ার ?
আশা করি পুরো সিনারিওটা বোঝাতে পারলাম এই প্রশ্নোত্তরগুলো দিয়ে। এরপর আর কোনো কনফিউশন থাকার কথা না। নোটটা শেষ করি বন্ধু সাজ্জাদ হোসাইন মুকিতের সাজেস্ট করা কিছু টপিক দিয়ে। যারা ইন্ডিয়াতে নতুন পড়তে আসছে, এগুলো তাদের কাজে লাগার কথা।
অ্যাকাডেমিক বেনিফিটঃ ওপরেই কিছুটা ব্যাখ্যা করেছি। বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইন্ডিয়ার সার্টিফিকেট আপনার প্রোফাইলকে হেল্প করবে অনেক বেশি। এখানে পড়াশোনা শেষ করে আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধি হচ্ছে, মৌলিক জ্ঞান বা অ্যাকাডেমিক সেক্টরে সিরিয়াস কোনো বিষয় নিয়ে গবেষণামূলক কাজ করার জন্য ইন্ডিয়া খুব ভালো জায়গা, যে সুযোগটা আমরা দেশে পাই না।
এসব মৌলিক জ্ঞান বা গবেষণা মাস্টার্স এবং পিএইচডি লেভেলের জন্য মাস্ট। স্কলারশিপ পেতে গেলে এগুলো আপনার লাগবেই। সবাই না হলেও, ইন অ্যান এভারেজ, টিচাররা খুবই ভালো মানের, খুব আন্তরিকতা নিয়ে পড়ানো হয় এখানে। গবেষণার কাজে টিচারদের প্রচুর হেল্প পাবেন। হায়ার স্টাডিজের জন্য বিদেশে যেতে গেলে ডিপার্টমেন্টের হেডের কাছ থেকে "রিকমেন্ডেশন লেটার" নামে একটা চিঠি নিতে হয়, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ডকুমেন্ট। এই জিনিসটা বাংলাদেশের শিক্ষকেরা দিতে প্রচুর টাল-বাহানা করেন। ইন্ডিয়াতে এই রিকমেন্ডেশন লেটার শিক্ষকেরা খুব আগ্রহ নিয়ে তৈরি করে দেন।
কো-কারিকুলার বেনিফিটঃ যারা সাংস্কৃতিক কাজ-কারবারের সাথে জড়িত, যারা ডিবেট, কুইজ, গান, নাচ সহ বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলার কাজকর্মে জড়িত ছিলেন স্কুল-কলেজ লাইফে, ইন্ডিয়া তাদের জন্য স্বর্গ। বিশাল দেশ, বিচিত্র সব সংস্কৃতির মানুষ, সাথে অন্যান্য দেশের স্টুডেন্টদের পড়তে আসা। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার চমৎকার পরিবেশ আছে এখানে। উপরন্তু ICCR, FISA, WOSY সংগঠনগুলো থেকে দুই-তিনমাস পরপরই বিশাল বাজেটের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ইন্ডিয়া ট্যুর ইত্যাদি অ্যারেঞ্জ করা হয়। এগুলোর সুবিধা আপনারা বিনামূল্যে পাবেন, তবে সেজন্য আপনাকে তাদের অ্যাকটিভ মেম্বার হতে হবে।
ঘোরাঘুরিঃ ICCR প্রতি সেমিস্টারের শেষে একটা চমৎকার ট্যুরের আয়োজন করে। ইন্ডিয়ার সুন্দর সুন্দর সব জায়গায় ঘোরাতে নিয়ে যাওয়া হয় এইসব ট্যুরে। বছরে দুইবার হয় এই ট্যুর। ICCR স্টুডেন্টদের জন্য এই দুইটা ট্যুরের মধ্যে একটা ফ্রিতে দেয়া হয়। আপনি চাইলে দুইটাতেই যেতে পারবেন, তবে দ্বিতীয়টার টাকা আপনাকে পে করতে হবে। অসাধারণ হয় এই ট্যুরগুলো, যারা গেছে তাদের জিজ্ঞাসা করে দেখতে পারেন।
লাইফস্টাইলঃ বাংলাদেশের চেয়ে উন্নত তো বটেই। তবে নতুন স্টুডেন্ট আপনারা, আমরা সিনিয়র হিসাবে এইটুকু উপদেশ দিতে পারিঃ আনন্দ করবেন অবশ্যই, আনন্দ করারই তো বয়স এইটা। তবে গা ভাসিয়ে দিয়েন না একেবারে, তাহলে রেজাল্ট খারাপ হবে। আপনাকেও দেশে ফিরে গিয়ে বলতে হবে যে, "ইন্ডিয়ার পড়াশোনা খারাপ, তাই চলে আসলাম।"
ওপরে যে কারণগুলো ব্যাখ্যা করলাম এতোক্ষণ, সেগুলো যদি আপনাকে সন্তুষ্ট করতে পারে, তবে ইন্ডিয়াতে যেতে পারেন। তা না হলে বাকীটা আপনার ইচ্ছা। আফটার অল, দিনের শেষে আপনার নিজের ডিসিশনটা নিজেকেই নিতে হবে। আমরা সিনিয়ররা শুধু ডিসিশন নেয়াতে পজেটিভ কোনো প্রভাব রাখতে পারি, আর কিছুই না। বাঙালি নাকি মাগনা পেলে আলকাতরাও খায়। সাড়ে সাত লক্ষ টাকার একটা স্কলারশিপ পাওয়ার পরেও সেই স্কলারশিপ না নেয়ার মতো, বা সেটা নিয়ে হেলাফেলা করার মতো নির্বুদ্ধিতার কাজ করলে ভবিষ্যতে পস্তানোর চান্সই বেশি।
আপনাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিলাম। আমি সামান্য একটা প্রশ্ন করতে চাইঃ ICCR এর স্কলারশিপ পাওয়ার আগে বাংলাদেশে ঠিক কী পজিশনে ছিলেন আপনি ? সেই পজিশনটা নিয়ে যদি আপনি সন্তুষ্ট থাকেন, তাহলে স্কলারশিপের অ্যাপ্লাই করারই দরকার ছিলো না আপনার। এখন স্কলারশিপ পাওয়ার পর, খেতে পেলে শুতে চাওয়ার মতো নতুন নতুন শাখামৃগসুলভ আবদার শুরু করলে, সেটা কিছুটা হলেও কি হাস্যকর হবে না ? এর চেয়ে যা কাছে পাও হাত পেতে নাও, বাকীর খাতায় শূন্য থাক !
নতুন যারা যারা স্কলারশিপ পেয়ে ইন্ডিয়াতে এসেছেন এবং আসছেন, সবার জন্য শুভকামনা। আপনাদের ফিউচার সুন্দর হোক, সাকসেসফুল হোক - সেটাই আমাদের সবার চাওয়া। একটাই অনুরোধ, বিদেশে গিয়ে দেশকে ভুলে যাবেন না। দেশের নাম উজ্জ্বল করার জন্য নিজের জায়গা থেকে যতটুকু পারেন, চেষ্টা করবেন। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আমাদের দেশের জন্য আর কিছু হবে না।
আমার স্কলারশিপ পাওয়ার প্রসেস সংক্রান্ত নোটটা পড়ে এবার পঁচিশজনের মতো চান্স পেয়েছে বলে খবর পেয়েছি। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ যারা আমার ওপর আস্থা রেখেছিলেন। ব্যাঙালোরে যারা এসেছে এবং সাথে যোগাযোগ করেছে, তাদেরও বেশির ভাগকে সেট করে দিয়েছি এখানে। ধন্যবাদ মুকিতকে, ধন্যবাদ বিসর্গ'দাকে - ইন্ডিয়াতে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করার জন্য যারা প্রতিনিয়ত ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াচ্ছেন এবং স্যাক্রিফাইস করছেন। আপনাদের বিন্দুমাত্র উপকার হলেই আমাদের এসব কাজ সার্থক।
"আলোর পাখি, নাম জোনাকি, জাগি রাতের বেলা
নিজেকে জ্বেলে এই আমাদের ভালোবাসার খেলা !"
মঙ্গল হোক সবার !
নিরন্তর শুভকামনা।
প্রশ্ন আসাটা অস্বাভাবিক না। একটা স্টুডেন্ট নতুন একটা দেশে আসবে, তার ক্যারিয়ার নিয়ে ভাববে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ব্যাপার হচ্ছে, কিছু অতি জ্ঞানী সিনিয়রের উল্টা-পাল্টা সাজেশনের কারণে এই নতুন স্টুডেন্টগুলো বিভিন্ন বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছে, ফলে বাড়ছে অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নের পরিমাণ। তো নতুন স্টুডেন্টদের সেসব বিভ্রান্তি দূর হওয়া উচিত বলেই আমরা ইন্ডিয়াতে পড়াশোনা করে যাওয়া স্টুডেন্টরা মনে করি। সবাইকে পার্সোনালি কাউন্সেলিং করাও বিশাল সময়ের ব্যাপার। সেইজন্যেই এই নোট লেখা।
লেখা শুরু করার আগে দুইটা কথা স্ট্রিক্টলি বলে রাখিঃ
১। একজনকে দিয়ে, দুইজনকে দিয়ে সবাইকে বিচার করাটা আমাদের একটা কমন বদভ্যাস। সেই বদভ্যাসের প্রয়োগ দয়া করে কমেন্ট সেকশনে কেউ করবেন না। "আমি একজনের কাছে শুনেছি", "আমার এক বড় ভাই", "আমার এক পরিচিত" - ইন্ডিয়াতে পড়তে গিয়ে অমুক দেখেছে, তমুক অভিজ্ঞতা হয়েছে এইসব প্রশ্ন অ্যাভয়েড করবেন সবাই। একজন এসে একটা কথা বললো, আপনিও সেটা বিশ্বাস করলেন, বিশ্বাস করার আগে বিষয়টা যাচাই করলেন না - খুবই খারাপ কথা। কমন সেন্স অ্যাপ্লাই করলেই বোঝা যায়, একজনের একটা নেগেটিভ কথা একটা পুরো দেশের পড়াশোনার অবস্থা বোঝানোর জন্য কোনোই ভ্যালু বহন করে না।
২। কোনো বিষয়ে জানার জন্য গুগলের সহায়তা নিতে হবে সবার আগে। যে ফেসবুক করতে পারে, সে অবশ্যই গুগল করতে পারবে। তাই কোনো প্রশ্ন করার আগে শিওর হয়ে নেবেন যে, সেটার উত্তর গুগলে নাই বা আপনি চেষ্টা করেও খুঁজে পান নাই। "ইন্ডিয়াতে এই সাবজেক্টের জন্য ভালো ইউনিভার্সিটি কোনটা", "অমুক ইউনিভার্সিটির র্যাংকিং কতো" - এইসব তো গুগল করলেই জানা যায়রে ভাই ! জানা না গেলে এরপর বড় ভাইরা আছে। তার আগে নিজে একটু খাটেন। জীবন ছেলেখেলা নয় - Life is not a playboy :D
শুরু করা যাক সাধারণ জিজ্ঞাস্য প্রশ্নগুলোঃ
- আমি অমুক কলেজে স্কলারশিপ পেয়েছি, কিন্তু কলেজটা বেসরকারি। বেসরকারি কলেজের মান অবশ্যই সরকারি কলেজের চেয়ে খারাপ হবে। আমার কি যাওয়া উচিৎ হবে ?
উত্তরঃ ভুরুঙ্গামারী কলেজ একটা সরকারি কলেজ, আর নটরডেম একটা বেসরকারি কলেজ। আপনাকে যদি দুইটার মধ্যে একটাতে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়, তাহলে কোনটাতে যাবেন ? ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ বা কোনো দক্ষিণ এশিয়ান দেশের প্রেক্ষাপটেই এই ধারণাটা ভুল যে, সরকারি কলেজ মানেই ভালো কলেজ আর বেসরকারি কলেজ খারাপ। যেখানে সাউথ এশিয়ার প্রায় দেশের সরকারই আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত, সেখানে ইন্ডিয়ার সরকারি কলেজ মানেই সেটা ভালো হবে, এমন কোনো গ্যারান্টি নাই। অবশ্য বেসরকারি সব কলেজই যে ভালো, তা নয়।
- আমাকে অমুক কলেজে স্কলারশিপ দিয়েছে। কলেজটা কি ভালো ?
উত্তরঃ সব দেশেই কলেজ-ইউনিভার্সিটির মধ্যে ভালো খারাপ থাকে। তাই ইন্ডিয়ার কলেজ জন্যই ভালো কলেজ বা খারাপ কলেজ বলে ধরে নেয়ার কোনো কারণ অবশ্যই নাই। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে, ICCR কোনো খারাপ কলেজে স্কলারশিপ দেয় না। এই সংস্থাটার কাজ হচ্ছে ইন্ডিয়ার সাথে বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নয়ন। আপনাকে খারাপ কলেজে স্কলারশিপ দিলে ইন্ডিয়ার নামই ডুববে। সেই কাজটা ICCR করবে কেন ? অতএব, ICCR এর স্কলারশিপ যারা পাচ্ছেন, নিরানব্বই শতাংশ নিশ্চয়তা আমি ব্যক্তিগতভাবে দিচ্ছি যে, আপনার কলেজ অবশ্যই ভালো কলেজ।
- আমাকে যে কলেজে স্কলারশিপ দিয়েছে, সেই কলেজটা তো কোনো র্যাংকিং এ নাই।
উত্তরঃ "র্যাংকিং" বিষয়টাই খুবই বিতর্কিত একটা বিষয়। এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্য কোনো সার্বজনীন মাপকাঠি আবিষ্কৃত হয়নি, যেটা দিয়ে কোনো কলেজ বা ইউনিভার্সিটির ভালো বা খারাপ বোঝা যায়। সেইজন্য, কোনো পত্রিকা বা ওয়েবসাইট যে র্যাংকিং দেয়, সেটাকে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক পর্যবেক্ষণ বলেই ধরে নিতে হবে।
উদাহরণঃ অক্সফোর্ড ভালো না কেমব্রিজ ভালো ? কুয়েট ভালো না আইইউটি ভালো ? - এই প্রশ্নের কোনো যথাযথ উত্তর আপনি দিতে পারবেন না। যদি দিতে পারেন, তাহলে সেটা হবে ঘুরে ফিরে সেই একইঃ "আমার শালা কুয়েট থেকে পাশ করে এতো বেতনের চাকরি করছে", "আমার দুলাভাই আইইউটি থেকে পাশ করে এতো টাকা বেতন পাচ্ছে"। দুনিয়াতে আপনার শালা বা আপনার দুলাভাই-ই যে শেষ কথা নয়, সেটা বুঝতে হবে আপনাকে।
একান্তই র্যাংকিং দেখতে চাইলে রাম-শ্যাম-যদু মার্কা ওয়েবসাইটে না গিয়ে ভালো এবং নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট দেখতে হবে, যেমনঃ উইকিপিডিয়া। র্যাংকিং আপনার কলেজের না দেখে দেখবেন সেই কলেজ যে ইউনিভার্সিটির আন্ডারে, অর্থাৎ যে ইউনিভার্সিটি থেকে সেই কলেজের সার্টিফিকেট আসে - সেই ইউনিভার্সিটির র্যাংকিং।
- নির্ভরযোগ্য র্যাংকিং পাওয়া না গেলে প্রতিষ্ঠানের ভালো খারাপ বোঝার মাপকাঠি কী ?
উত্তরঃ অবশ্যই মাপকাঠি হচ্ছে তাদের স্টুডেন্টরা, কিন্তু স্টুডেন্টদের মধ্যে একজনের উদাহরণ নিলে হবে না। দেখতে হবে সেই কলেজের টিচারদের কোয়ালিফিকেশন কী। দেখতে হবে, সেই কলেজ থেকে পাশ করা স্টুডেন্টরা "সাধারণত" কেমন কাজ পেয়ে থাকে। একটা কলেজে হাজার হাজার ছাত্র পড়ে। আপনি র্যান্ডম তিনশোজন স্টুডেন্টের উদাহরণ দেখতে পারেন, তখন সেটা মোটামুটি গ্রহণযোগ্য একটা রেজাল্ট দিতে পারে।
কোনো প্রতিষ্ঠানই লিখে দিতে পারে না যে, তাদের স্টুডেন্টরা সবাই ভালো হবে। কলেজ লাইফটা পুরাপুরি আপনার ওপরে। আপনি যদি পড়াশোনা না করেন, তাহলে কোনো টিচাররই সাধ্য নাই আপনাকে দিয়ে পড়াশোনা করিয়ে নেয়।তাই কলেজ ভালো হলেও অনেক সময় স্টুডেন্ট ভালো হয় না, আবার কলেজ খারাপ হলেও অনেক ভালো স্টুডেন্ট ডেলিভারি দিতে পারে। আমাদের দেশের ক্যামব্রিয়ান কলেজটার কথা ধরা যাক। ম্যাট্রিকে জিপিএ-থ্রি পাওয়া স্টুডেন্টদের ভর্তি করিয়ে, সকাল বিকাল ডলা দিয়ে তারা স্টুডেন্টগুলোকে ইন্টারে জিপিএ-ফাইভ পাওয়ায়। এখন ক্যামব্রিয়ান বেসরকারি, র্যাংকিং এ নাই জাতীয় অদ্ভুত অজুহাত দিয়ে কি আপনি ক্যামব্রিয়ানকে রিজেক্ট করে দিতে পারবেন ?
- ইন্ডিয়ার এসব প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেটের ভ্যালু বাংলাদেশে কেমন ?
উত্তরঃ শুধু গ্র্যাজুয়েশন করে আজকাল কোথাও চাকরি পাওয়া যাচ্ছে না, কম্পিটিশন বেড়ে গেছে অনেক। পিএইচডি করেও অনেকে চাকরি পাচ্ছে না। এটার মূল কারণ অবশ্য আপনার পুঁথিগত বিদ্যা। পড়েছেন ঠিকই, রেজাল্টও ভালো করেছেন - কিন্তু ব্যবহারিক জ্ঞান কিছুই নাই। তাহলে চাকরি পাবেন কীভাবে ?
তাই ইন্ডিয়াতে গ্র্যাজুয়েশন করে এসেই যদি আপনি বাংলাদেশে চাকরির আশা করতে থাকেন, তাহলে বিফল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বাংলাদেশের কয়টা স্টুডেন্ট গ্র্যাজুয়েশন করার সাথে সাথে চাকরি পেয়ে যাচ্ছে ? মিনিমাম মাস্টার্সটা আজকাল ম্যান্ডেটরি হয়ে গেছে চাকরির ক্ষেত্রে। এমনকি বুয়েটের বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররাও আজকাল এমবিএ করেই তারপর চাকরি পাচ্ছেন।
- মাস্টার্সের জন্যও কি ইন্ডিয়া স্কলারশিপ দিবে ?
উত্তরঃ ICCR সাধারণত একজন স্টুডেন্টকে একবারের বেশি স্কলারশিপ দেয় না, যদি না সেই স্টুডেন্ট খুবই ফাটাফাটি রেজাল্ট করে। সেরকম রেজাল্ট না থাকলে ধরে নিতে পারেন যে, মাস্টার্সে আপনার স্কলারশিপ হবে না ইন্ডিয়াতে। তবে অ্যাপ্লাই করতেই পারেন। লেগে গেলে তো গেলোই।
- মাস্টার্সে স্কলারশিপ না পেলে আর ইন্ডিয়াতে পড়ে লাভ কী ?
উত্তরঃ নেসেসারি না যে আপনাকে গ্র্যাজুয়েশন-মাস্টার্স একই জায়গা থেকে করতে হবে। দুনিয়াতে প্রচুর দেশ প্রচুর স্কলারশিপ দেয়। আপনার রেজাল্ট ভালো হলে, ব্যক্তিগত আউটপুট এবং স্কলারশিপদাতা দেশগুলোকে কনভিন্স করার মতো ক্ষমতা ভালো থাকলে অন্য দেশেও স্কলারশিপ পেয়ে যেতে পারেন। সেই দেশ ইন্ডিয়ার চেয়ে ভালো দেশ হতে পারে, হতে পারে যে প্রতিষ্ঠানে মাস্টার্সের স্কলারশিপ পাবেন, সেটা আপনার গ্র্যাজুয়েশনের প্রতিষ্ঠানের চেয়েও ভালো।
- ইন্ডিয়াতে পড়াশোনার পর কি চাকরি করা যায় ?
উত্তরঃ চাকরি পাওয়াই যায়, তবে চাকরিটা করা যায় না একটা কারণে। কারণটা হচ্ছে ওয়ার্ক পারমিট। ইন্ডিয়ার জনসংখ্যা বিশাল। অন্য দেশের একটা লোককে চাকরি দেয়া মাত্রই একজন ইন্ডিয়ান বঞ্চিত হয়। স্বাভাবিকভাবেই সেজন্য ইন্ডিয়ান সরকার নিয়ম করে দিয়েছে, বিভিন্ন চাকরিতে ইন্ডিয়ান লোকেদের একটা নির্দিষ্ট পার্সেন্টে অগ্রাধিকার দেয়ার।
আপনাকে চাকরি দিতে হলে ইন্ডিয়ার আপনার কাছ থেকে সেই অনুপাতে ইন্ডিয়ার ইনকাম ট্যাক্স পেতে হবে। আর সেজন্য আপনাকে জব পার্মিট ইন্ডিয়া তখনই দিবে, যখন আপনার বার্ষিক আয় অন্তত ৬ লক্ষ টাকা হয়। এই অংকটা আবার সব জায়গায় সমান না। কিছু কিছু স্টেটে অংকটা ১৩ লক্ষ পর্যন্ত যায়।
এতো উঁচু বেতনের চাকরি গ্র্যাজুয়েশন করলেই কেউ পেয়ে যায় না। তাই মাস্টার্স করার পরে জব পার্মিট পেতে পারেন, কারণ তখন বেতন ভালো হবে আপনার। তার আগে, অর্থাৎ গ্র্যাজুয়েশন করার পর, জব পার্মিট পাওয়া এতোই কঠিন যে, সেটা প্রায় অসম্ভবের পর্যায়ে। তাই এই আশাটা না করাই বাস্তবসম্মত হবে।
- আমি শুনেছি যে, ইন্ডিয়া থেকে পড়াশোনা করে আসা স্টুডেন্টরা বাংলাদেশে ভ্যালু পায় না ? এটা কি সত্যি ?
উত্তরঃ এই বিষয়টা বেশ আলোচনা সাপেক্ষ। কয়েকটা ফ্যাক্টর কাজ করে এখানে।
প্রথমত, ইন্ডিয়া একটা বিশাল দেশ। আমরা তুলনামূলক খুব ছোট দেশের স্টুডেন্ট। ছোট দেশে থাকতে থাকতে মন-মানসিকতার একটা নেতিবাচক পরিবর্তন হয়, মনে হয় এর বাইরে যাওয়া সম্ভব না, গন্ডিটা মনে হয় খুবই ছোট। এজন্যই দেশের অল্প কয়েকটা ইউনিভার্সিটিতে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
অথচ, একজন স্টুডেন্টের হতে হবে আন্তর্জাতিক চিন্তা-ভাবনার অধিকারী। তাকে দেশের সীমানার বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে হবে। বাংলাদেশে আমাদের সেই অপরচুনিটি কম, ইন্ডিয়াতে অনেক বেশি। এখানে এসে গ্র্যাজুয়েশন করার পর স্টুডেন্টদের নজর অনেক বড় হয়, কারণ তারা সারা বিশ্বের স্টুডেন্টদের সাথে মিশতে শেখে। এইজন্যে ইন্ডিয়াতে পড়াশোনা করে স্টুডেন্টরা বেশির ভাগই অন্যান্য বিভিন্ন উন্নত দেশে চলে যায় হায়ার স্টাডি করতে।
ইন্ডিয়ানরা সারা দুনিয়াতে ছড়িয়ে আছে। ইন্ডিয়ার পড়াশোনার মান খারাপ হলে ইন্ডিয়ানরা সারা দুনিয়াতে সার্ভাইভ করছে কীভাবে ? এই প্রশ্নটা কমন সেন্স থেকে করলেই ইন্ডিয়ার পড়াশোনার মান বুঝতে পারার কথা। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আজকাল বাইরের দেশে যা দাঁড়িয়েছে, তাতে করে বাইরের দেশে পড়াশোনা করতে গেলে ইন্ডিয়ান সার্টিফিকেটের ভ্যালু বাংলাদেশের সার্টিফিকেটের চেয়ে বেশি পাওয়ার কথা। ঠিক এই কারণেই স্টুডেন্টগুলো সবাই বাইরে চলে যাচ্ছে, দেশে তেমন কেউই থাকছে না।
এজন্যই চোখ খুললেই ভারত থেকে পড়াশোনা করা উচ্চপদস্থ কোনো ছাত্র সচরাচর নজরে পড়ে না আমাদের। এর মানে এই নয় যে দেশে কেউই নেই। অনেকেই আছেন। গুগলে ICCR, Indian Bangladeshi Student, Alumni - এসব শব্দ লিখে সার্চ দিলেই বিভিন্ন লিস্ট পাওয়া যাবে তাদের। আমি যে লিস্টগুলো পেয়েছি, তাদের একটা বড় অংশ বেশ ভালো পজিশনেই আছেন। আমাদের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির টিচারদের মধ্যে অনেকেই ইন্ডিয়ান গ্র্যাজুয়েট বা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট।
সমস্যা হচ্ছে, আমাদের নজরে আসে কিছু সিনিয়র, যারা দিনে রাতে ইন্ডিয়ার পিন্ডি চটকাচ্ছে এবং বলছে ইন্ডিয়ার পড়াশোনা ভালো না। ওপরের উদাহরণগুলো দিয়ে আশা করি যথেষ্ট প্রমাণ দিয়েছি, ইন্ডিয়ার পড়াশোনার মান কেমন। তাহলে কেন এমন করছে এই সিনিয়ররা ? কারণটা খুবই হাস্যকর।
আসলে হঠাৎ করে বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়াতে এসে সবাই তাল ঠিক রাখতে পারে না। বড় দেশ, প্রচুর সুযোগ সুবিধা। সাথে আছে হাতে ICCR এর দেয়া নগদ টাকা। প্রচুর ছেলে-মেয়ে এখানে এসে হঠাৎ স্বাধীনতা পেয়ে নষ্ট হয়ে যায়। স্বাধীন জীবন, ঠেকানোর কেউ নেই। শস্তা মদ, খোলামেলা পোশাকের মেয়ে - এগুলোতে মজে যায় তারা। এর কারণে তাদের রেজাল্ট খারাপ হয়। একটা খারাপ রেজাল্টের স্টুডেন্টকে কে চাকরি দিবে ? আবার এমনও দেখা যায়, বাংলা মিডিয়াম থেকে ইউনিভার্সিটি লেভেলের ইংলিশ মিডিয়ামে এসে অনেক স্টুডেন্ট কিছুই বুঝতে পারে না। সুতরাং তারা রেজাল্ট খারাপ করে। অনেকে আবার ঠাডা মুখস্তবিদ্যা দিয়ে ভালো রেজাল্ট হয়তো করে ফেলে, কিন্তু ভিতরে কিছুই নাই।
নিজের অক্ষমতার এই দায়টা খুব সুন্দরভাবে চাপিয়ে দেয়া যায় ইন্ডিয়ার ওপরে। বলে দেয়া যায়, ইন্ডিয়ার পড়াশোনার মান ভালো না। একটা বার চিন্তা করে দেখা কি উচিৎ নয় যে, সেই স্টুডেন্টের মানটা কেমন ? যদি সে খারাপ স্টুডেন্ট হয়, তাহলে সেই দোষ কি ইন্ডিয়ার ?
আশা করি পুরো সিনারিওটা বোঝাতে পারলাম এই প্রশ্নোত্তরগুলো দিয়ে। এরপর আর কোনো কনফিউশন থাকার কথা না। নোটটা শেষ করি বন্ধু সাজ্জাদ হোসাইন মুকিতের সাজেস্ট করা কিছু টপিক দিয়ে। যারা ইন্ডিয়াতে নতুন পড়তে আসছে, এগুলো তাদের কাজে লাগার কথা।
অ্যাকাডেমিক বেনিফিটঃ ওপরেই কিছুটা ব্যাখ্যা করেছি। বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইন্ডিয়ার সার্টিফিকেট আপনার প্রোফাইলকে হেল্প করবে অনেক বেশি। এখানে পড়াশোনা শেষ করে আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধি হচ্ছে, মৌলিক জ্ঞান বা অ্যাকাডেমিক সেক্টরে সিরিয়াস কোনো বিষয় নিয়ে গবেষণামূলক কাজ করার জন্য ইন্ডিয়া খুব ভালো জায়গা, যে সুযোগটা আমরা দেশে পাই না।
এসব মৌলিক জ্ঞান বা গবেষণা মাস্টার্স এবং পিএইচডি লেভেলের জন্য মাস্ট। স্কলারশিপ পেতে গেলে এগুলো আপনার লাগবেই। সবাই না হলেও, ইন অ্যান এভারেজ, টিচাররা খুবই ভালো মানের, খুব আন্তরিকতা নিয়ে পড়ানো হয় এখানে। গবেষণার কাজে টিচারদের প্রচুর হেল্প পাবেন। হায়ার স্টাডিজের জন্য বিদেশে যেতে গেলে ডিপার্টমেন্টের হেডের কাছ থেকে "রিকমেন্ডেশন লেটার" নামে একটা চিঠি নিতে হয়, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ডকুমেন্ট। এই জিনিসটা বাংলাদেশের শিক্ষকেরা দিতে প্রচুর টাল-বাহানা করেন। ইন্ডিয়াতে এই রিকমেন্ডেশন লেটার শিক্ষকেরা খুব আগ্রহ নিয়ে তৈরি করে দেন।
কো-কারিকুলার বেনিফিটঃ যারা সাংস্কৃতিক কাজ-কারবারের সাথে জড়িত, যারা ডিবেট, কুইজ, গান, নাচ সহ বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলার কাজকর্মে জড়িত ছিলেন স্কুল-কলেজ লাইফে, ইন্ডিয়া তাদের জন্য স্বর্গ। বিশাল দেশ, বিচিত্র সব সংস্কৃতির মানুষ, সাথে অন্যান্য দেশের স্টুডেন্টদের পড়তে আসা। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার চমৎকার পরিবেশ আছে এখানে। উপরন্তু ICCR, FISA, WOSY সংগঠনগুলো থেকে দুই-তিনমাস পরপরই বিশাল বাজেটের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ইন্ডিয়া ট্যুর ইত্যাদি অ্যারেঞ্জ করা হয়। এগুলোর সুবিধা আপনারা বিনামূল্যে পাবেন, তবে সেজন্য আপনাকে তাদের অ্যাকটিভ মেম্বার হতে হবে।
ঘোরাঘুরিঃ ICCR প্রতি সেমিস্টারের শেষে একটা চমৎকার ট্যুরের আয়োজন করে। ইন্ডিয়ার সুন্দর সুন্দর সব জায়গায় ঘোরাতে নিয়ে যাওয়া হয় এইসব ট্যুরে। বছরে দুইবার হয় এই ট্যুর। ICCR স্টুডেন্টদের জন্য এই দুইটা ট্যুরের মধ্যে একটা ফ্রিতে দেয়া হয়। আপনি চাইলে দুইটাতেই যেতে পারবেন, তবে দ্বিতীয়টার টাকা আপনাকে পে করতে হবে। অসাধারণ হয় এই ট্যুরগুলো, যারা গেছে তাদের জিজ্ঞাসা করে দেখতে পারেন।
লাইফস্টাইলঃ বাংলাদেশের চেয়ে উন্নত তো বটেই। তবে নতুন স্টুডেন্ট আপনারা, আমরা সিনিয়র হিসাবে এইটুকু উপদেশ দিতে পারিঃ আনন্দ করবেন অবশ্যই, আনন্দ করারই তো বয়স এইটা। তবে গা ভাসিয়ে দিয়েন না একেবারে, তাহলে রেজাল্ট খারাপ হবে। আপনাকেও দেশে ফিরে গিয়ে বলতে হবে যে, "ইন্ডিয়ার পড়াশোনা খারাপ, তাই চলে আসলাম।"
ওপরে যে কারণগুলো ব্যাখ্যা করলাম এতোক্ষণ, সেগুলো যদি আপনাকে সন্তুষ্ট করতে পারে, তবে ইন্ডিয়াতে যেতে পারেন। তা না হলে বাকীটা আপনার ইচ্ছা। আফটার অল, দিনের শেষে আপনার নিজের ডিসিশনটা নিজেকেই নিতে হবে। আমরা সিনিয়ররা শুধু ডিসিশন নেয়াতে পজেটিভ কোনো প্রভাব রাখতে পারি, আর কিছুই না। বাঙালি নাকি মাগনা পেলে আলকাতরাও খায়। সাড়ে সাত লক্ষ টাকার একটা স্কলারশিপ পাওয়ার পরেও সেই স্কলারশিপ না নেয়ার মতো, বা সেটা নিয়ে হেলাফেলা করার মতো নির্বুদ্ধিতার কাজ করলে ভবিষ্যতে পস্তানোর চান্সই বেশি।
আপনাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিলাম। আমি সামান্য একটা প্রশ্ন করতে চাইঃ ICCR এর স্কলারশিপ পাওয়ার আগে বাংলাদেশে ঠিক কী পজিশনে ছিলেন আপনি ? সেই পজিশনটা নিয়ে যদি আপনি সন্তুষ্ট থাকেন, তাহলে স্কলারশিপের অ্যাপ্লাই করারই দরকার ছিলো না আপনার। এখন স্কলারশিপ পাওয়ার পর, খেতে পেলে শুতে চাওয়ার মতো নতুন নতুন শাখামৃগসুলভ আবদার শুরু করলে, সেটা কিছুটা হলেও কি হাস্যকর হবে না ? এর চেয়ে যা কাছে পাও হাত পেতে নাও, বাকীর খাতায় শূন্য থাক !
নতুন যারা যারা স্কলারশিপ পেয়ে ইন্ডিয়াতে এসেছেন এবং আসছেন, সবার জন্য শুভকামনা। আপনাদের ফিউচার সুন্দর হোক, সাকসেসফুল হোক - সেটাই আমাদের সবার চাওয়া। একটাই অনুরোধ, বিদেশে গিয়ে দেশকে ভুলে যাবেন না। দেশের নাম উজ্জ্বল করার জন্য নিজের জায়গা থেকে যতটুকু পারেন, চেষ্টা করবেন। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আমাদের দেশের জন্য আর কিছু হবে না।
আমার স্কলারশিপ পাওয়ার প্রসেস সংক্রান্ত নোটটা পড়ে এবার পঁচিশজনের মতো চান্স পেয়েছে বলে খবর পেয়েছি। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ যারা আমার ওপর আস্থা রেখেছিলেন। ব্যাঙালোরে যারা এসেছে এবং সাথে যোগাযোগ করেছে, তাদেরও বেশির ভাগকে সেট করে দিয়েছি এখানে। ধন্যবাদ মুকিতকে, ধন্যবাদ বিসর্গ'দাকে - ইন্ডিয়াতে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করার জন্য যারা প্রতিনিয়ত ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াচ্ছেন এবং স্যাক্রিফাইস করছেন। আপনাদের বিন্দুমাত্র উপকার হলেই আমাদের এসব কাজ সার্থক।
"আলোর পাখি, নাম জোনাকি, জাগি রাতের বেলা
নিজেকে জ্বেলে এই আমাদের ভালোবাসার খেলা !"
মঙ্গল হোক সবার !
নিরন্তর শুভকামনা।
দাদা একটু হেল্প লাগতো
উত্তরমুছুনদাদা একটু হেল্প লাগতো
উত্তরমুছুনএই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
উত্তরমুছুনভাইয়া unfortunately আমার মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক এর ফল Gpa 3.31 & 2.90 কিন্তু আমার সপ্ন ভারতের কোন ভালো ভার্সিটি থেকে কম্পিউটার এন্ড সাইন্স এর কোন বিষয়ে পড়ালেখা করা।
উত্তরমুছুনআমার ক্ষেত্রে কি কোন সুযোগ আছে,থাকলে কি পরিমান খরচ লাগতে পারে?
thanks sir
উত্তরমুছুনSir, আমি উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেছি ২ বছর আগে। আমি এখন LLB(hons) complete করতে চাই ভারতে গিয়ে। আমার করনীয় কি sir?
উত্তরমুছুনআই আই টি তে চান্স পাওয়ার পসিবিলিটি আছে কি???
উত্তরমুছুন